নারী-পুরুষদের মধ্যে কি ডিপ্রেশন কম-বেশি হয়ে থাকে?
অবসাদ, বিষণ্ন বা ডিপ্রেশন শব্দের সঙ্গে প্রায় সবাই আমরা পরিচিত। কম-বেশি সবাই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যখন এর ভুক্তভোগীকে জেন্ডারভিত্তিক বিচার-বিবেচনা করা হয়।
কখনো কোনো সমস্যাকে অনেকটা জোর করেই কারও ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। ব্রেইনসওয়ের একটি প্রতিবেদন বলছে, জেন্ডার কোনোভাবেই একজনের মানসিক স্বাস্থ্য কীভাবে গঠিত হয় তার একমাত্র নির্ধারক নয়। অবসাদের সঙ্গে অন্যান্য নানা বিষয়গুলো যুক্ত থাকে। নারী-পুরুষ সবাই অবসাদে ভুগতে পারেন।
একজন ব্যক্তির গঠনের ক্ষেত্রে কেবল লিঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে। আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন (এপিএ) অনুসারে, নারীদের ১ দশমিক ৫ থেকে ৩ পর্যন্ত অবসাদে ভোগার সম্ভাবনা থাকে। লিঙ্গভিত্তিক এই পার্থক্য শুধু দশ বছর বয়সের কাছাকাছি পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং মধ্যবয়স পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই সময়ে নারী ও পুরুষের মধ্যে অবসাদের হার ফের একই রকম হয়ে যায়।
এখন প্রশ্ন থেকে যায় তাহলে কি তরুণী-প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের অর্থাৎ, বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু করে এবং এর উর্বরতার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয় অবসাদ? তরুণ-পুরুষদের তুলনায় এটি বেশি সংবেদনশীল?
গবেষণা কয়েকটি সম্ভাব্য কারণের দিকে ইঙ্গিত করে। দেখা গেছে একসঙ্গে নারী এবং পুরুষরা কিভাবে এই অবসাদের সঙ্গে লড়াই করে এবং সম্ভাব্য মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে সামগ্রিকভাবে নজর দেয়।
নারীদের মধ্যে অবসাদের সাধারণ লক্ষণগুলো কয়েকটি প্রাসঙ্গিক কারণকে আলোকপাত করে। শুরুর দিকে মনে হয় নারীরা পুরুষের তুলনায় বেশি মানসিকভাবে আবদ্ধ। যেখানে বোঝা যায় নারীরা অবসাদের সঙ্গে মোকাবিলা করছে কিনা।
নারীদের নেতিবাচক আবেগ এবং যন্ত্রণা উপসর্গগুলো উচ্চতর বিষণ্নতার সঙ্গে যুক্ত বলেও দেখা গেছে। নারীরা তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। একই সঙ্গে অবসাদের ক্ষেত্রেও।
জেন্ডারভিত্তিক অবসাদ পার্থক্যের হারের ওপর একটি অনুমান বলে, পুরুষদের মধ্যে অবসাদের অনেকগুলো ক্ষেত্রই নির্ণয় করা যায় না। এ পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করা পুরুষদের হার আসলে অনেক বেশি।
অবসাদে ভুগতে থাকা পুরুষদের কম নির্ণয়ের কারণগুলো প্রধানত এর উপসর্গ ও সাহায্য চাওয়ার সঙ্গে জড়িত। পুরুষরা কম বুঝতে পারে যে তারা অবসাদের সঙ্গে মোকাবিলা করছে এবং সচেতনভাবে এর মুখোমুখি হওয়ার পরিবর্তে বিষণ্ন চিন্তাভাবনা বা অনুভূতিগুলোকে দূরে সরিয়ে দিতে পারে।
তবে নারী-পুরুষ কেউ যদি হতাশা, অবসাদ বা মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভুগছেন বলে মনে হয়, তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।